যদি আপনি এখনও কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্ত না হয়ে থাকেন তাহলে অপেক্ষা করুন-সম্ভবত আপনি আক্রান্ত হবেন। কাংখিতভাবে আপনি কম্পিউটার ভাইরাসের সত্যিকার স্বর্ণযুগ হাতছাড়া করেছেন যখন এন্টিভাইরাস বর্তমানের মত এত ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো না এবং ভাইরাস আক্রমনের কারণে এক রাতের ভেতরে মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়ে যেতো। বর্তমানে ভাইরাস এখনও কম্পিউটার নির্ভরশীল মানুষদের মাথা-ব্যথার কারণ হলেও অ্যাভারেজ ইউজারদের জন্য বিগত কিছুদিন পূর্বের চেয়ে ক্লিনআপ তুলনামূলক সহজ, যখন একটি মাত্র সল্যুউশন বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনার হার্ডড্রাইভ রি-ফরমেটিং এবং স্ক্র্যাচ থেকে শুরু করে (এমনকি মাঝে মাঝে ট্রিক করে না). তাই চলুন প্রিয় পাঠক, স্মৃতির পাতা থেকে কিছু ক্ষতিকারক ভাইরাস সমূহের কিছুটা স্মৃতি রোমন্থন করি।

ব্রেইন, ১৯৮৬
সমস্ত যন্ত্রণার শুরু ‘ব্রেন’ থেকেই। এটাই প্রথম সত্যিকারের ভাইরাস যা আবিষ্কৃত হয়েছিলো ১৯৮৬ সালে। ব্রেন সত্যিকারভাবে যদিও আপনার পিসিকে আক্রমন করে না তবে এটা মেলওয়্যার (ক্ষতিকারক সফটওয়্যার) সমূহের আনাগোনার পথ উন্মুক্ত করে দেয় এবং প্রায় একলক্ষেরও বেশি ভাইরাস তৈরিকারকদের পরবর্তী দুই পক্ষের জন্য খারাপ আইডিয়া দেয়।


মিশেল এঞ্জেলো, ১৯৯১
এটাই এমএস ডসের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকারক ভাইরাস সব সময়ের জন্য। মিশেল এঞ্জেলো আপনার হার্ডড্রাইভের বুটসেক্টর এবং যেকোন ফ্লপি বা পেনড্রাইভ যা আপনি পিসিতে ইনসার্ট করবেন তাতে আক্রমন করবে। কারণ এ ভাইরাসটি কল্পনার চেয়েও দ্রুত ছড়াতে পারে। এটা প্রথম যখন ছড়ায় তখন প্রায় মাসখানেকের মত নীরবে কাজ করার পর মার্চের ৬ তারিখে কার্যকর হয় এবং প্রায় ১০ লাখেরও বেশি কম্পিউটারে ডাটা ধ্বংস করে ফেলে।

মেলিসা, ১৯৯৯
মেলিসা টেকনিক্যাল ধরনের একটি ভাইরাস (ট্রিপারের পর এর নামকরণ করা হয়েছে)। এ ভাইরাসটি সমস্ত ই-মেইল সিস্টেমে একটি হযবরল অবস্থা তৈরি করে ফেলে এবং এর ফলে কম্পিউটারসমূহ একটি অপরটির মধ্যে হাজারো মেসেজ পাঠাতে শুরু করে। এই ভাইরাসটির জনককে খুঁজে বের করা হয় এবং ২০ মাসের জেল দেয়া হয়।

আইলাভইউ,২০০০
এটা এমন একটি ভাইরাস যা কম্পিউটার ইউজারদেরকে একটি ফাইল ওপেন করার জন্য প্ররোচিত করে। এক্ষেত্রে প্রেমিক হৃদয়কে আকুল করে তার প্রেমির নিকট লাভ লেটার লিখতে উদ্বুদ্ধ করে। কিন্তু সত্যিকারভাবে প্রেমপত্র না হয়ে সে ফাইলটি হয় ভিবিএস স্ক্রিপ্ট যা হাজারো জানক-ইমেইল প্রেরণ করে এবং অজস্র জরুরি ফাইল ডিলিট করে ফেলে। এই ভাইরাসটি বিশ্বের প্রায় ১০ শতাংশেও বেশি কম্পিউটার আক্রমণ করেছিল। যেখানে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন ডলার। এটাই সম্ভবত এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ভাইরাস আক্রমণ।


কোড রেড, ২০০১
এটা হচ্ছে আকস্মিক ‘ব্লেন্ডেড থ্রেট’ অ্যাটাক। কোড রেড আক্রমণ করে যে সমস্ত কম্পিউটারে ওয়েব সার্ভিস চালু রয়েছে সেগুলোকে। এ ভাইরাসটি ওয়েবসাইট ফেস করে এবং পরবর্তীতে আইপি এড্রেসের মাধ্যমে সার্ভিস এ্যাটাক লঞ্চ করে।

নিমডা, ২০০১
কোড রেড অ্যাটাক সিস্টেম মেশিনের ভেতরে একাধিক ক্ষেত্র তৈরি করে (ইমেইল, ওয়েবসাইট, নেটওয়ার্ক কানেকশন এবং অন্যান্য)। কিন্তু নিমডা আক্রমন করে ওয়েব সার্ভার এবং ইউজার মেশিন উভয়কেই। এটা কম্পিউটারের ভেতরে খুবই কার্যকরভাবে নিজের পথ খুঁজে নেয়। মাত্র ২২ মিনিটের ভেতরে এটা ইন্টারনেটের সবচেয়ে ক্ষতিকারক বন্তুতে পরিণত হতে পারে।

ক্লেজ,২০০১
ক্লেজ ২০০১ সালের আরেকটি বড় ধরনের ভাইরাস আক্রমন। এটা একধরনের ই-মেইল ভাইরাস। ই-মেইলের ‘ফ্রম’ অপশনে এটা নিজের কেরামতি দেখায় অনেকটা দার্শনিকভাবে যা ইউজারকে দ্বিধাগ্রস্ত করে ফেলে।


স্ন্যামার, ২০০৩
মাত্র ১০ মিনিটে এই ভাইরাসটি প্রায় ৭৫,০০০ সিস্টেমকে আক্রমন করে যা ইন্টারনেটের গতিকে ধীর করে দেয় (অনেকটা কোড রেডের মত) এবং হাজারো ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়।


মাইডুম, ২০০৪
মাইডুম ই-মেইলের মাধ্যমে যে কয়টি ভাইরাস ছড়িয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত নিজের কারিশমা দেখায়। এটা কম্পিউটারকে আক্রমণ করে এবং একাধিক জাঙ্ক ইমেইল প্রেরণ করে। এর সাথে এটা এসসিও গ্রুপের ওয়েবসাইট আক্রমন করেছিলো। লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে কোড ব্যবহার করে খুবই অপরিচিত ১টি কোম্পানি পরিচিত কোম্পানির মধ্যে ঢুকে পড়ে।


স্টর্ম, ২০০৭
এটা সাম্প্রতিক কালের ক্ষতিকারক ভাইরাস। ই-মেইল স্প্যামের মাধ্যমে স্টর্ম ছাড়ায় ফোক এটাচমেন্টের মাধ্যমে। জুম্বি বুটনেটের মাধ্যমে প্রায় ১০ মিলিয়ন কম্পিউটারকে আক্রমণ করে।