Wimax1010

অবশেষে গ্রাহকের হাতের নাগালে আসার জন্য প্রস্তুত হয়েছে বহুল প্রতিক্ষীত ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি। আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি ছড়িয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশে অপারেট করার জন্য লাইসেন্সধারী দুটি প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা।

ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি ব্যবহারে অন্যতম লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান অর্জের ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড লিমিটেড ইতোমধ্যে গুলশান, বারিধারা ও বনানী এলাকায় এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরীড়্গামূলকভাবে সেবা দিচ্ছে। অপরদিকে বাংলালায়ন ঢাকায় ওয়াইম্যাক্স সার্ভিসের ট্যারিফ প্ল্যান প্রকাশ করেছে। দুটি প্রতিষ্ঠানই জানিয়েছে, তারা এখন গ্রাহক সেবার জন্য প্রস্তুত।

অর্জের ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড লিমিটেডের হেড অফ মার্কেটিং রাসেল টি আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমকে জানান, ‘আমরা গুলশান বারিধারা ও বনানী এলাকা ইতোমধ্যেই আমাদের গ্রাহক সেবার আওতায় এনেছি এবং প্রায় দেড়শত গ্রাহক আমাদের সার্ভিস পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করছেন।’

ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তিতে যে ধরনের ইন্টারনেট সেবা দেয়া সম্ভব তা বাংলাদেশের কোনো ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আগে দেখেননি। এ প্রযুক্তি চালু হবার পর বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা আগের তুলনায় অনেক বেশি ইন্টারনেট নির্ভর হবেন’ বলেই রাসেল টি আহমেদ জানান। পাশাপাশি ২০১০ সালের প্রথম তিন মাসের মধ্যেই দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে দ্রুতগতির এ ইন্টারনেট ও ডেটা ট্রান্সফার প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেয়ার আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

ওয়াইম্যাক্স শব্দটির পুরো মানে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইন্টারঅপারেবিলিটি ফর মাইক্রোওয়েভ এক্সেস। এর মাধ্যমে তারবিহীনভাবে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক তৈরি করা সম্ভব এবং এ পদ্ধতিতে প্রতি সেকেন্ডে ৩ মেগাবিট পর্যন্ত ডেটা পাঠানো যায়, যা বাংলাদেশে প্রচলিত ইন্টারনেট গতির তুলনায় কয়েকশ গুণ বেশি।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) প্রথম বারের মতো বাংলাদেশে ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার লক্ষে কাজ শুরু করে গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে। এই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে টেলি যোগাযোগের নিয়ন্ত্রক এ প্রতিষ্ঠান এক উন্মুক্ত দরপত্রের আহ্বান করে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে।

এই দরপত্রে অংশ নিয়ে সর্বো"চ দরদাতা হিসেবে ২১৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ওয়াইম্যাক্স সংযোগ দেয়ার অনুমোদন পায় বাংলা লায়ন, ব্র্যাক বিডিমেইল নেটওয়ার্ক লিমিটেড এবং অর্জের ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড লিমিটেড। বিটিআরসি তাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস অ্যাকসেস সংযোগ প্রদান সংক্রান্ত লাইসেন্স দেয় ১৮ নভেম্বর ২০০৮ এ। পরে ব্র্যাক বিডিমেইল নেটওয়ার্ক লিমিটেড তার লাইসেন্সটি প্রত্যাহার করে নেয়।

অনুমোদন প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলালায়ন প্রাথমিকভাবে শুধু ঢাকায় জুন মাসের মধ্যেই ওয়াইম্যাক্স সংযোগ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছিলো। তবে সে তারিখ নানা কারণে পিছিয়ে যায়।

বাংলালায়নের ওয়েব সাইট (banglalion.com.bd)) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি ১২৮ কেবিপিএস (কিলোবিট পার সেকেন্ড) গতির সংযোগ দেয়ার অফার দিয়েছে। এ বিষয়ক একটি ট্যারিফ প্ল্যানও তারা প্রকাশ করেছে সাইটে।

অপর প্রতিষ্ঠান অর্জের ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড লিমিটেডও চলতি বছরের ২১ জুলাই হোটেল ওয়েস্টিনে ওয়াইম্যাক্স বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেয়, যে খুব শীঘ্রই দ্র"তগতির ইন্টারনেট সার্ভিস ওয়াইম্যাক্স সেবা তারা দেবেন। যদিও তারা কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেননি।

সোয়া দুইশত কোটি টাকার লাইসেন্স ফি এবং নেটওয়ার্ক তৈরির খরচ বিবেচনা করে এ প্রযুক্তি ব্যবসা হিসেবে লাভজনক হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে দুটি প্রতিষ্ঠানই ইতিবাচক উত্তর দিয়েছে। ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত হলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা অনেক বেশি ইন্টারনেট নির্ভর হবেন এবং সে সময় বর্তমানের তুলনায় অনেক বেশি গ্রাহক এই সেক্টরে যুক্ত হবেন। পাশাপাশি তখন ইন্টারনেট নির্ভর অনেক সার্ভিসও গ্রাহকসেবার জন্য উন্মুক্ত হবে বলেই জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

উল্লেখ্য, বিশ্বে সবচেয়ে ধীর গতির ইন্টারনেট সার্ভিস ভোক্তা দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশে প্রায় ৪০ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে।


সৌজন্যে : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর