প্রযুক্তির উন্মেষতায় এবার যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধিত হতে চলেছে চোখের চিকিৎসায়। সারাবিশ্ব জুড়ে প্রযুক্তিকে সফলভাবে ইতিমধ্যেই মানবদেহের চিকিৎসায় ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানবদেহের কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরির ফলে চিকিৎসা খাতে আধুনিকতা সংযোজিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় অন্ধত্ব দূরীকরণে চোখের চিকিৎসায় উদ্ভাবন করা হয়েছে ‘আরগুস টু’ নামক বায়োনিক আই। কৃত্রিম এই চোখের মাধ্যমে মূলত ইনহেরিটেড চোখের অসুখ সমূহের কারণে যে সকল রোগী রেটিনা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণে দৃষ্টিহীনতার সম্মুখীন হয়েছে তাদের কল্যাণে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এই ‘বায়োনিক আই’ মূলত একটি মানবদেহের কৃত্রিম চোখ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে এবং এটিতে ক্ষুদ্রাকৃতির ক্যামেরা সংযুক্ত করা হয়েছে। ক্ষুদ্রাকৃতির ক্যামেরাতে প্রাপ্ত ডাটাসমূহ ওয়্যারলেস সিগন্যালের মাধ্যমে ট্রান্সমিট করা হয় যা ক্ষুদ্রাকৃতির আল্ট্রা ইলেকট্রনিক রিসিভার গ্রহণ করে থাকে। এই ক্ষুদ্রাকৃতির ইলেকট্রনিক রিসিভার এবং ইলেকট্রোড প্যানেলকে চোখ এবং রেটিনার সাথে সংযুক্ত করা হয়। ফলে ইলেকট্রোড প্রাপ্ত ডাটাসমূহকে রেটিনাল নার্ভের সমন্বয়ে সিগন্যাল প্রবাহিত করে অপটিক নার্ভে যা সংযুক্ত করা হয়ে থাকে ব্রেনে। ফলে ব্রেন নিয়ন্ত্রিত দৃষ্টি ক্ষমতাসম্পন্ন চেখের ন্যায় কাজ করতে সক্ষম হয়ে থাকে আর গুস-টু নামক এই ‘বায়োনিক আই’। সেকেন্ড সাইট নামক যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান এই প্রযুক্তির উন্নয়ন সাধন করলেও এটি মূলত ব্যবহার করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত ‘মেরফিল্ডস আই হাসপাতাল’-এ। কৃত্রিম চোখের এই প্রযুক্তি প্রথমবারের মত এই হাসপাতালে দুইজন রোগীর উপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করার মাধ্যমে সফলতাও অর্জন করেছেন তারা। অপারেশনে নিযুক্ত সার্জন লিনডন দ্যা ক্রুজ জানান, ‘প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল হিসেবে এর মাধ্যমে অন্ধত্ব দূরীকরণ সম্ভব হবে সুনির্দিষ্ট চোখের অসুখের ক্ষেত্রে। আমরা এই ডিভাইস সমূহ দুইজন রোগীকে অপারেশনের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করেছি এবং তারা দুজনই এর সুফল অনুভব করছেন।’