প্রায় ১৫০ বছর পর প্রথমবারের মতো বাজানো হলো এক নারীর গাওয়া ফরাসি লোকসংগীতের ১০ সেকেন্ডের একটি অংশ। ১৮৬০ সালে ধারণ করা এই শব্দ রেকর্ড করা সবচেয়ে পুরোনো মানুষের কন্ঠ বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে মনে করা হতো, ১৮৭৭ সালে ধারণ করা টমাস এডিসনের গাওয়া একটি শিশুসংগীতই ছিল পুরোনো।কার্বনমাখা কাগজে একটি ফোনোটোগ্রাফ ব্যবহার করে এটি ধারণ করা হয়েছিল। মার্কিন বিজ্ঞানীরা এটি থেকে শব্দ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। শব্দ-ইতিহাসবিদ ডেভিড জিওভান্নি পুরোনো এই রেকর্ডটি খুঁজে পান। তিনি বলেন, ‘আমি যখন প্রথম এটি শুনলাম, আমার কাছে তা মায়াবী মনে হয়েছে।’
১০ সেকেন্ডের এই গানটি ১৮৬০ সালের ৯ এপ্রিল একটি ফোনোটোগ্রাফ ব্যবহার করে ধারণ করা হয়। প্যারিসের এক উদ্ভাবক এদোয়ার্ত-লিও স্কট ডি মার্টিনভাইল এটি তৈরি করেছিলেন। কুপি থেকে পাওয়া কার্বন-মাখানো কাগজে শব্দ ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু এটা কখনো বাজানোর চেষ্টা করা হয়নি। জিওভান্নি প্যারিস থেকে এই রেকর্ড উদ্ধার করেন। তিনি শব্দ-ইতিহাসবিদ, শব্দধারণ প্রকৌশলীদের একটি দল ও ফার্স্ট সাউন্ডস নামের একটি গ্রুপের সঙ্গে কাজ করছিলেন। তাঁদের লক্ষ্য, ধারণ করা সবচেয়ে পুরোনো শব্দ খুঁজে বের করা।
রেকর্ডটি থেকে শব্দ উদ্ধার করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লরেন্স বার্কলি ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে (এলবিএনএল)। সেখানে একটি ‘ভার্চুয়াল স্টাইলাস’ ব্যবহার করে রেকর্ড করা কাগজটি উচ্চ রেজ্যুলেশনে ডিজিটাল স্ক্যান করা হয়।খ্যাতনামা উদ্ভাবক টমাস এডিসন ১৮৭৭ সালে তাঁর উদ্ভাবিত ফোনোগ্রাফের মাধ্যমে ‘ম্যারি হ্যাড এ লিটল ল্যাম্ব’ রেকর্ড করেছিলেন। এত দিন এটাই সবচেয়ে পুরোনো রেকর্ডিং হিসেবে পরিচিত ছিল। জিওভান্নি বলেন, ‘টমাস এডিসনের কৃতিত্বকে খাটো করে দেখা হচ্ছে না। তবে তাঁর আগেও শব্দ ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু এডিসনই প্রথম ব্যক্তি, যিনি শব্দ ধারণ করার পর তা বাজিয়ে শোনাতে পেরেছিলেন।’ ২৮ মার্চ ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েশন ফর রেকর্ডেড সাউন্ড কালেকশনসের এক সম্মেলনে বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো এই রেকর্ড বাজিয়ে শোনানো হয়।