মানুষের মস্তিষ্কের অনুভূতি বুঝতে সক্ষম অত্যাধুনিক প্রযুক্তির হেডসেট মানুষের বিনোদনের বর্তমান রূপরেখাই বদলে দিতে চলেছে। নিউরো হেডসেট নামক এই হেডসেটটির বৈশিষ্ট হচ্ছে এটি মানুষের ব্রেনের অর্থাৎ নিউরনের সংকেত অনুযায়ী কাজ করে থাকে। নিউরো হেডসেট প্রস্তুতকারী যুক্তরাষ্ট্র/অস্ট্রেলিয়ান মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ইমোটিভ-এর প্রেসিডেন্ট ট্যান লি জানান, ‘আমাদের প্রস্তুতকৃত এই নিউরো হেডসেট ব্যবহারকারী মস্তিষ্কের ইলেকট্রিক্যাল একটিভিটি গ্রহণ করার মাধ্যমে ওয়্যাললেস সিগন্যালের মাধ্যমে কম্পিউটারে পাঠাতে সক্ষম। ফলে এটি মানুষের অনুভূতি অনুযায়ী কম্পিউটারের বিভিন্ন ভার্চ্যুয়াল গেম খেলতে ব্যবহারকারীর অনুভূতি প্রকাশ করে। মূলত জনপ্রিয় বিভিন্ন গেমসমূহ খেলতে এই নিউরো হেডসেটের কোনো বিকল্প নেই। কেননা, গেমাররা এতোদিন শুধু গেম খেলে আনন্দ পেয়েছে কিন্তু তাদের অনুভূতি গেমসমূহের মধ্যে প্রকাশ করতে পারেনি। কিন্তু এটি ইলেকট্রো এনসেফেলো গ্রাফি (ইইজি) প্রযুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের নিউরাল কার্যক্রম অনুযায়ী ওয়্যারলেস সিগন্যাল বিভিন্ন গেমসমূহে প্রয়োগ করে থাকে। ফলে একজন গেমার, গেমের বিভিন্ন স্তরে তার সাফল্য, ব্যর্থতা, আনন্দ ইত্যাদি বিষয়ে অংশগ্রহন করতে পারে। মূলত ভার্চ্যুয়াল প্রযুক্তি সম্বলিত ভিডিও গেমস্-এর ক্ষেত্রে এই নিউরো হেডসেট কার্যকর।’ এই হেডসেটের মাধ্যমে ব্যবহারকারী গেম খেলা অবস্থায় যাবতীয় অনুভূতিসমূহ সংকেতের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল বিশ্বের পরিপূর্ণ বাস্তবতা সমৃদ্ধ গেম খেলার আনন্দ প্রধান করেন। এই নিউরো হেডসেটটি মানুষের সুনির্দিষ্ট ৩০টি ভিন্ন অনুভূতি গ্রহন করতে সক্ষম এবং সে অনুযায়ী ভার্চ্যুয়াল গেমের অভ্যন্তরে প্রকাশ করতে সক্ষম। মাত্র ২৯৯ ইউএস ডলার মূল্যের এই হেডসেটটি ওয়্যারলেস প্রযুক্তির সমন্বয়ে ইউএসবি প্লাগড অবস্থায় কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত থাকে। একজন ব্যক্তির উত্তেজনা আবেগ হতাশা এমনকি মুখায়বের বিভিন্ন অনুভূতি যথা হাসি, বিদ্রুপ, দুঃখ ও রাগসহ মানবিক গুণাবলী বুঝতে সক্ষম এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে সক্ষম। ফলে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে গেমাররা ভার্চ্যুয়াল গেমগুলোতে তাদের অনুভূতির মাধ্যমে চিন্তার বাস্তবায়ন ঘটাতে সক্ষম হয়ে থাকে এবং সত্যিকার অর্থে পরিপূর্ণ গেম উপভোগ করতে পারে। বিশ্বজুড়ে থ্রিডি গেমের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে নিউরো হেডসেটের চাহিদা। কেননা ইতিপূর্বে থ্রিডি গেমের মাধ্যমে গেমাররা আনন্দ লাভ করলেও এই নিউরো হেডসেটের মাধ্যমে থ্রিডি গেমসমূহ পরিপূর্ণভাবে নিজেদেরকে ভার্চ্যুয়াল পৃথিবীতে প্রবেশ করাতে সক্ষম হবে। বিশ্বজুড়ে দিন দিন জনপ্রিয়তা লাভ কারী এই নিউরো হেডসেটের সাফল্য বিশ্বজুড়ে ভার্চ্যুয়াল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।