দিন দিনই প্রযুক্তির আধুনিকায়ন এতোই দ্রুতলয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে যে, অদূর ভবিষ্যতে কর্মব্যস্ত মানুষের হাতের মুঠোয় প্রযুক্তির সর্বশেষ সুুবিধাদি নিয়ে চলার প্রচলন ঘটে থাকবে। হাতের মুঠোতে সকল প্রযুক্তি নিয়ে ঘোরার এই মাধ্যমটি অবশ্যই মোবাইলের উৎকর্ষতায় সম্ভবপর হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তিপ্রেমী অধিকাংশ ব্যক্তিই সহজে বহনযোগ্য ল্যাপটপ ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বের সাথে নিজেকে সবসময় সম্পৃক্ত রাখে। কিন্তু এমন সময় আসছে যখন ল্যাপটপের চাহিদা কমে যাবার মাধ্যমে মোবাইল ফোনে সকল কাজ করা সম্ভবপর হবে। প্রাথমিক দৃষ্টিতে এই প্রযুক্তি এখনো তেমন ডেভেলপ না হলেও বিশেষজ্ঞরা আশা করেছেন আগামী বার থেকে আঠারো মাসের মধ্যেই এই প্রযুক্তির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্মার্টফোন হিসেবে বিবেচিত নতুন প্রযুক্তির মোবাইল ফোন তৈরি করা সম্ভবপর হবে। এই বিষয়ে সিমবিয়ান প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিগেল ক্লিফোর্ড জানান, ‘মানুষের কাজে ব্যবহৃত সকল ধরনের ইলেকট্রোনিক্স ডিভাইসের সম্মিলিত কাজ সমূহ ভবিষ্যতের এই স্মার্টফোনের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হবে। মাল্টিফাংশনাল ডিভাইস হিসেবে বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত যন্ত্রাদি ব্যবহার ভবিষ্যতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই ব্যবহারকারীরা করতে সক্ষম হবে। সেই সাথে বিশ্বজুড়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচিত জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) সুবিধা পাওয়া সম্ভব হবে হাতের মুঠোয় রাখা মোবাইল ফোনে। যদিও প্রাথমিক অবস্থায় এই সুবিধা সম্বলিত মোবাইল ফোন সুনির্দিষ্ট এলাকাসমূহে পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। উন্নত বিশ্ব বিশেষ করে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে এই জিপিএস প্রযুক্তি সম্বলিত মোবাইলফোন ব্যবহারকারীরা যেকোন অবস্থানে থেকেই তার প্রয়োজনীয় এলাকার ছবি নিজের হাতে রাখা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেখতে সক্ষম হবে। লিগেল ক্লিফোর্ড আরো জানান, ‘এই মোবাইলের মাধ্যমে মাল্টিমিডিয়া বৈশিষ্ট সম্বলিত ক্ষেত্রের ব্যাপক উন্নয়ন সক্ষম হবে। বিশেষ করে থ্রিডি গ্রাফিক্স, ভিডিও এবং গেমসসমূহ মোবাইলে অন্তভূক্ত থাকায় ব্যবহারকারীদের প্রাত্যহিক জীবনে ভূমিকা রাখতে ব্যাপকভাবে সক্ষম হবে এই উন্নত প্রযুক্তি সম্বলিত মোবাইল ফোন। তবে এই ফোনে এই সকল কাজ সমাধা করতে ব্যবহার করা হবে ক্ষুদ্রাকৃতির প্রসেসর। এই বিষয়ে ফোনে চীপ ডিজাইন কাজে নিয়োজিতরা জানান, কোরটেক্সএ৯ নামক চীপ ডিজাইনে কাজ এগিয়ে চলছে। ওয়াইফাই প্রযুক্তি সম্বলিত এই মোবাইলফোনের নেটওয়ার্কসমূহ মূলত থ্রিজি এবং ফোরজি সম্পন্ন হয়ে থাকবে। সেই সাথে প্রাত্যহিক জীবনে দ্রুত ডাটা ট্র্যান্সফারের কাজে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রেডিও ফ্রিকোয়েন্সী ব্যবহার করার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর ক্ষেত্রে অনলাইনে রিয়েল ড্রাইভার হিসেবে ওয়েব ২.০ ব্যবহার করা হবে। ফলে এই মোবাইলের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা দ্রুতগতিতে টেক্সট ম্যাসেজ থেকে শুরু করে বড় ডাটা শেয়ার করার সুবিধা লাভ করবে। যার ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত ল্যাপটপের ভূমিকা অনেকক্ষেত্রেই হ্রাস পেয়ে থাকবে। যদিও এখনো এই মোবাইলের বাজারজাত শুরু হয়নি। তবুও এসকল ফিচার সমৃদ্ধ মোবাইলের প্রতি বিশ্বজুড়ে তুমুল আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। মোবাইলটি মূল্য এখানো পর্যন্ত নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি বলে গবেষণায় নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান। তবে প্রাথমিক অবস্থায় স্মার্টফোন হিসেবে বিবেচিত প্রযুক্তির সর্বশেষ সুবিধাদি সম্বলিত এই মোবাইলফোনের দাম বেশি হবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। যদিও প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে প্রযুক্তির সফল বাস্তবায়নই প্রধান বিবেচ্য বিষয়।