প্রতিনিয়ত পর্দার উন্েনাচনে চমকে দিয়ে আমাদের ঘরে এসে উপস্িথত হয়ে চলেছে আনকোরা নতুন প্রযুক্তির অনুষঙ্গ। বিনোদনের সেরা টেলিভিশন জগতেও ঘটে চলেছে একই ধারা।এলসিডি এবং প্লাজমা: ভাবনাটা হালকা মনে হলেও সত্য, অধুনা এলসিডি (লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে) এবং প্লাজমাই বহুদিনের পুরোনো টেলিভিশন প্রযুক্তি রক্ষা করছে।দিন দিন দুটোই হয়ে উঠছে তুলনামূলকভাবে আরও বড়, উজ্জ্বল, হালকা, সস্তা এবং শক্তিসাশ্রয়ী। বড় পর্দা হিসেবে সড়কের মাথার ওপরে বা বিশাল মিলনায়তনের জন্য পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে প্লাজমা পর্দা। অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের ক্ষেত্রে এটা এলসিডি। তবে এখন এলসিডি টিভির পর্দা ক্রমশ বড় হয়ে ওঠার কারণে ক্রমেই এ পার্থক্য মিলিয়ে যাচ্ছে। পাইওনিয়ারের ‘কুরো’ টিভিতে এসেছে কালোসহ নানা রং।অনেকের মতে, এযাবৎকালের মধ্যে এটা সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন প্লাজমা। আর প্যানাসনিক?
প্যানাসনিকের ১৫০ ইঞ্চি প্লাজমা টিভি:
আকারের দিক থেকে গত বছরের শীর্ষে অবস্থানকারী শার্পের ১০৮ ইঞ্চি এলসিডি পর্দা পেছনে ফেলে এবার সদর্পে এসেছে প্যানাসনিকের ১৫০ ইঞ্চির প্লাজমা টিভি, দেখেমনে হবে যেন উন্নুক্ত কোনো প্রান্তর। নয়টি ৫০ ইঞ্চি প্লাজমা পর্দার সমন্বিত আকারে এসেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পর্দার এই টেলিভিশন। ৮৮ লাখ ৪০ হাজার পিক্সেলে এটি ছবি দেখাতে পারে।এর প্রস্থ ১১ ফুট আর উচ্চতা ছয় ফুটেরও বেশি।প্রতিবছরই বেড়ে চলেছে টেলিভিশনের আকার। তবে এবারে এ হার লক্ষণীয় মাত্রায় বেশি। একটা বড়সড় এসইউভি গাড়ির (স্পোর্ট ইউটিলিটি ভেহিকল) সমান আকারের টেলিভিশন উপস্িথত করে প্যানাসনিক আরও প্রমাণ করেছে, সমাপ্তি ঘটেনি প্লাজমা-সাম্রাজ্যের। বড় পর্দা মানেই বড় আকারের সবল কাচ। এসবের দাম নাগালের বাইরে! সম্ভবত তা-ই। তবে অনেকে মিলে দেখার ক্ষেত্রে দামটা চলনসই। এলসিডি কি পৌঁছবে ১৫০ ইঞ্চির মতো সুবিশাল আকারে? অন্তত ২০০৮-এ নয়। লেজার টিভি: গত বছর লেজার টেলিভিশন নিয়ে ছোটখাটো হইচই হয়ে গেছে। কিছু মানুষের মতে এই প্রযুক্তিটি যেন এক সরল ফাঁকিবাজি! কিন্তু যা-ই হোক না কেন, কোনো না কোনোভাবে এটা এখন বিদ্যমান। লেজার টেলিভিশন একটা প্রক্ষেপণনির্ভর টিভি প্রযুক্তি, যা আলো সৃষ্টি করার জন্য ইনক্যান্ডিসেন্ট বাতির বদলে ব্যবহার করে লেজার। উদ্ভাবকেরা বলেন, এটা কম শক্তি ব্যবহার করে এবং এলসিডির তুলনায় হালকা। এমন বাল্ব ব্যবহূত হয়, যা কখনোই পুড়ে যায় না। মিৎসুবিশিও আসছে এ প্রযুক্তি নিয়ে।
অর্গানিক এলইডি টিভি:
এখন পর্যন্ত বিনোদনশিল্পে আবছা উপস্িথতি নিয়ে অবস্থান করছে অর্গানিক টিভি। এমপি থ্রি প্লেয়ার এবং ক্যামেরায় থাকা ছোট্ট মনিটর হিসেবে দারুণ উপযোগী এই ছোট টিভি। অন্য সব ধরনের টিভি প্রযুক্তিতে পটভুমিতে আলোর দরকার থাকলেও এতে তা লাগে না। তার মানে এটা বেশ শক্তিসাশ্রয়ী এবং এ কারণে খরচও কম। এটাও আকারে ক্রমশ বড় হয়ে চলেছে। গত বছর সনির প্রদর্শনীতে ছিল ২৭ ইঞ্চির অর্গানিক টিভি।ডিসেম্বরে জাপানেও প্রদর্শিত হয়েছে এই অর্গানিক টিভি সেট।
এসইডি টিভি:
এলসিডির প্রতিযোগী হিসেবে অনুরূপ নকশার আরও এক প্রযুক্তি সারফেস কনডাকশন ইলেকট্রন এমিটার ডিসপ্লে−এসইডি টিভি। প্রায় ২০ বছর ধরে এই শিল্পে বিদ্যমান রয়েছে এ প্রযুক্তি। যা ২০০৬ সালে দেখানো হলেও, হয়নি ২০০৭ সালে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশ কয়েকবার ঘোষণা দেওয়া হলেও এ বছরে এই টিভি আসবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
২০২০ দশকের হলোগ্রাফিক টেলিভিশন:
আশা করা যায়, ২০২০ সালের পর বিস্নয়কর কিছু নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব হবে পদার্থবিদ্যার গবেষণাগারে। প্রায় জীবন্ত ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরির ক্ষেত্রে হলোগ্রাম এখনই এক পরিচিত উপাদান। ২০২০ দশকের শেষ নাগাদ আমাদের ঘরে টেলিভিশনের ছবির মানুষ, প্রাণী বা বস্তু পর্দার সীমানা ছাড়িয়ে হয়ে উঠবে হলোগ্রাফিক আর ত্রিমাত্রিক! ড্রইংরুমের অর্ধেক অংশজুড়ে থাকবে হলোগ্রাফিক টেলিভিশনের ত্রিমাত্রিক মঞ্চ।পর্দার সবকিছুকে স্পর্শ করা যাবে কিন্তু অনুভব করা যাবে না!



