প্রযুক্তির উন্মেষতায় দ্রুতলয়ে এগিয়ে চলেছে তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্র। এরই ধারাবাহিকতায় এবার তৈরি হতে চলেছে মানুষের মনের কথা বুঝতে সক্ষম কম্পিউটার। এই প্রযুক্তির কম্পিউটারের বিশেষত্ব হচ্ছে, এটি কম্পিউটার ব্যবহারকারীর মনের কথা কম্পিউটারে কম্পোজ করতে সক্ষম হবে। অর্থাৎ ইতোপূর্বে বিভিন্ন কম্পিউটারে ব্যবহারকারীদের কথা অনুযায়ী লেখার কাজ সমাধা করা সম্ভব হলেও এবারই প্রথম নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন কম্পিউটারের মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারীর ইচ্ছানুযায়ী লেখা মুখে না বললেও কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা লিখতে সক্ষম হবে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এই প্রযুক্তিসম্পন্ন কম্পিউটার নির্মানের সম্ভাবনার কথা জানান কার্নেগী মেলন বিশ্ববিদ্যালয়-এর মেশিন লানিং ডিপার্টমেন্টের গবেষক টম মিচেল। তিনি এই প্রযুক্তির বর্ণনা প্রদান করতে যেয়ে বলেন, ‘এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটারটি একজন ব্যবহারকারীর মনের কথা বুঝতে সক্ষম হবার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট কাজ করতে সক্ষম হবে। এটি মূলত সম্ভব হবে একজন কম্পিউটার ব্যবহারকারী যখন কম্পিউটারের স্ক্রীনের সামনে বসবে তখন কম্পিউটারটি বিশেষ ব্রেন স্ক্যানার প্রযুক্তির মাধ্যমে সেই ব্যক্তির ইচ্ছানুযায়ী লেখা কম্পোজ করতে সক্ষম হবে কোনরূপ সাহায্য ছাড়াই।’ অর্থাৎ এই প্রযুক্তির আওতায় একজন মানুষের বিভিন্ন কথা ভাবার সময় ব্রেনের যেসকল কাজ সম্পন্ন হয় তার বিভিন্ন ইমেজসমূহ পূর্ব থেকেই কম্পিউটারে সন্নিবেশিত করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি যখন সেসকল সুনির্দিষ্ট ওয়ার্ডসমূহ কল্পনা করবে তখন এই কম্পিউটার বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্রেন স্ক্যান করে সেসকল অক্ষর স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম্পোজ করে থাকে। গবেষণায় বিভিন্ন ব্যক্তির উপর পরিচালিত জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন কম্পিউটার সেই সকল সুনির্দিষ্ট অক্ষর ব্রেন স্ক্যানের মাধ্যমে বুঝতে সক্ষম হয়ে চলেছে। এখন গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে অধিকতর সংখ্যা বুঝতে সক্ষম কম্পিউটার তৈরির। অদূর ভবিষ্যতে এই গবেষণায় প্রাপ্ত সফলতা কাঙিক্ষতমাত্রায় অগ্রগতি সাধিত করা সম্ভব হলে নিশ্চিতভাবেই মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন কাজের ধারা সহজতর হবে বলে আশা প্রকাশ করছে গবেষকরা। তবে এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে এখন পর্যন্ত গবেষকদের নিকট বিবেচিত হচ্ছে ব্যক্তিবিশেষের স্বতন্ত্র চিন্তাধারার বিষয়টি। তবে প্রযুক্তিকে মানুষের কল্যাণে অধিকতর ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে গবেষণায় সফলতার বিষয়ে আশাবাদী গবেষকরা।