প্রাত্যহিক আধুনিক জীবনধারাতে কম্পিউটার সহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্যাদি ব্যবহারে অভ্যস্ত প্রায় সকলেই। কাজের প্রয়োজনে এবং বিনোদনের লক্ষ্যে আমরা সকলেই বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্যাদি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এই সকল ইলেকট্রনিক্স পণ্যাদি ব্যবহারে সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি করে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল। ফলে অনেকক্ষেত্রে প্রয়োজন এবং চাহিদা থাকা সত্ত্বেও নিজের ইচ্ছানুযায়ী এই সকল যন্ত্রাদি ব্যবহার করা সম্ভবপর হয়ে উঠে না। কিন্তু কিছু কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করতে পারি। নিজেদের বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ের পাশাপাশি আমরা দেশের উৎপাদিত বিদ্যুতের সাশ্রয় সাধনে ভূমিকা রাখতে পারি। আমরা অনেকেই কম্পিউটার এবং টিভি প্রতিদিন দীর্ঘসময় ব্যবহার করে থাকি। ফলে বিদ্যুতের খরচও বেশি হয়ে থাকে। কম্পিউটারের মনিটর এবং টিভি’র বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেকবেশি। এক্ষেত্রে আমরা যদি সিআরটি মনিটরের বদলে এলসিডি মনিটর এবং টিভি ব্যবহার করি তবে নিশ্চিতভাবে প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল অনেক সাশ্রয় হবে। বিশ্বখ্যাত কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স এসোসিয়েশন সম্প্রতি পরিচালিত এক জরিপে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী জানিয়েছে, প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহার উপযোগী বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাদির ক্ষেত্রে কিছু ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সম্ভব হলে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি ব্যবহারকারী পর্যায়ে বিদ্যুৎ খরচ হ্রাস করা সম্ভব। আর এই ক্ষেত্রে কোন যন্ত্রাদির বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ কত তা জানা খুবই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ‘ইলেকট্রিসিটি ইউজ মিটার’ হতে পারে আদর্শ সমাধান। এই ডিভাইসটি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাদির বিদ্যুৎ ব্যবহারের সঠিক পরিমাণ জানা সম্ভব। বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি রয়েছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য।


ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণ : আমরা যারা দীর্ঘক্ষণ যাবত কম্পিউটার এবং টিভি ব্যবহার করে থাকি তাদের জন্য এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর ভূমিকা রেখে থাকে। এলসিডি কম্পিউটার মনিটর এবং ফ্ল্যাটস্ক্রীন টিভি সমূহ সচরাচর অধিক ব্রাইটনেস সম্বলিত ডিসপ্লে প্রদান করে। এক্ষেত্রে আমরা ডিসপ্লে অপশনে চাহিদা অনুযাী ব্রাইটনেস নির্দিষ্ট করে দিলে তা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবে। একই কথা প্রযোজ্য সিআরটি প্রযুক্তির মনিটর এবং টিভির ক্ষেত্রেও।


তাৎক্ষণিক বন্ধ/ চালু করুন : প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় আমাদের ইলেকট্রনিক যন্ত্রাদির অনেক অপশন রয়েছে আমাদের জীবনধারাকে সহজতর করার লক্ষ্যে। তবে এই সকল সুবিধা লাভের বিনিময়ে আমাদের প্রদান করতে হয় বিদ্যুতের উচ্চ মূল্য। তেমনই একটি বিষয় হচ্ছে ইএম অপশন। এই অপশনে ব্যবহারকারীদের সুযোগ প্রদান করা হয় কম্পিউটার এবং টিভি ব্যবহার না করলেও সুনির্দিষ্ট সময়ে তা চালু অথবা বন্ধ করার। ফলে একজন ব্যবহারকারী কম্পিউটার এবং টিভি ব্যবহার না করলেও বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়ে থাকে এবং খরচ বৃদ্ধি পায়।

পাওয়ার সুইচ বন্ধ করুন : আমরা অনেকেই কম্পিউটার অথবা টিভি ব্যবহার শেষে শুধু বন্ধ করে থাকি। কিন্তু এক্ষেত্রে পাওয়ার সুইচ বন্ধ না করায় বিদ্যুতের ব্যবহার হয়ে থাকে।


পাওয়ার স্ট্রিপ ব্যবহার : উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সহজলভ্য পাওয়ার স্ট্রিপ ব্যবহারের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাদি’র বিদ্যুতের চাহিদা অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। পাওয়ার স্ট্রিপ মূলত একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের চাহিদার তুলনায় সুনির্দিষ্ট পরিমাণে বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে বিদ্যুতের সাশ্রয় করে থাকে। ফলে ব্যবহারকারীরা স্বল্প খরচে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাদি ব্যবহার করতে সক্ষম হতে পারে।


উল্লেখিত পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে স্বল্প বিদ্যুৎ খরচের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাদি ব্যবহারের খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব। একই সাথে নিজের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজন ব্যতিরেকে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাদি চালু অবস্থায় অন্যকাজে মনোনিবেশ না করার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় করা সম্ভব।