স্থানীয় সরকারকে ‘ই-গভর্নমেন্টস’ এর আওতায় আনার জন্য মাইক্রোসফট সম্প্রতি একটি ফ্রি প্রোগ্রাম চালু করেছে। এতে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করা হবে যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে নাগরিকদের আরো ভাল সার্ভিস দিতে পারবে। মাইক্রোসফটের এই সফটওয়্যারটির নাম ‘সিটিজেন সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম’। যা অফার করা শুরু হয়েছে বার্লিনে অনুষ্ঠিত গভর্নমেন্ট লিডারস ফোরাম থেকে। বিশ্বব্যাপী মাইক্রোসফটের পাবলিক সেক্টরের ভাইস প্রেসিডেন্ট রলফ ইয়াং এএফপি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমরা দেখছি যে গভর্নমেন্টকে ই-গভর্নমেন্টে রূপান্তরের প্রক্রিয়া প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। টেকনোলজি সম্পর্কে জনগণের আরো ব্যাপকভাবে জানার জন্য তারা নিজ নিজ সরকারের প্রতি ব্যপক আশাবাদ পোষণ করে। আশা করা হচ্ছে মাইক্রোসফটের টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকার আরো কার্যকর ভাবে নাগরিকদের প্রযুক্তিগত সার্ভিস প্রদান করতে পারবে। মাইক্রোসফট আগ্রহী সরকার সমূহকে টেমপ্লেট প্রোগ্রাম প্রদান করবে যার মাধ্যমে নাগরিকগণ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবে। যেমন: পাবলিক রেকর্ড সমূহে এক্সেস করা, ম্যারেজ সার্টিফিকেট নেয়া, ট্যাক্স প্রদান করা অথবা অনলাইনে জরিমানা দেয়া। জার্মানীতে অনুষ্ঠিত হওয়া ফোরামে মাইক্রোসফট ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট জিয়ান ফিলিপ বলেছেন, টেকনোলজি স্থানীয় এবং আঞ্চলিক সরকার সমূহের মধ্যবর্তী দূরত্ব কমিয়ে আনা এবং তাদের সার্ভিস সমূহকে আরো আধুনিক করার জন্য সাহায্য করতে পারে। তবে এখানে যে সমস্যাটি সবচেয়ে বড় তা হচ্ছে পর্যাপ্ত অর্থ, যন্ত্রাংশ এবং সফটওয়্যারের অভাব। সুলভ টেকনোলজি, টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য রিসোর্সের অভাবও রয়েছে। মাইক্রোসফট তাই এই ব্যাপারটি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই কাজ করেছে সরকার সমূহের সাথে এবং তারা যা শিখেছে তা টেমপ্লেটের মাধ্যমে সরকারকে প্রদর্শন করেছে যে কিভাবে জনগণকে অফিসিয়াল কাজে সাহায্য করা যায় এবং অনলাইনে তাদের বিভিন্ন কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করানো যায়। এই বাধাগুলো অনেকটাই অপসারিত হয়ে ই-গভর্নমেন্টের কাছকাছি চলে এসেছে যেখানে বিভিন্ন সার্ভিসের বাস্তব ট্রান্সফরমেশন সঠিক পথে চলে এসেছে। তবে এখনও বেশি সংখ্যক গভর্নমেন্ট ইন্টারনেট ভিত্তিক সার্ভিস সক্ষমতা ডেভেলপ করেনি। এক্ষেত্রে বড় প্রভাব রেখেছে অভিজ্ঞতা, স্কিল এবং বিগ আইটি (ইন্টারনেট টেকনোলজি) স্টাফ এর অভাব। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা ইতিমধ্যে নিজস্ব সফটওয়্যারের মাধ্যমে মাইক্রোসফটের ইঞ্জিনিয়ারগণ বিশ্বব্যাপী স্থানীয় সরকার সমূহের কাঁধ থেকে অতিরিক্ত বোঝা নামিয়ে ফেলতে সক্ষম হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, জ্যামাইকার অফিসিয়াল কর্মকর্তাগণ মাইক্রোসফটের সাথে কাজ করেছে হারিকেন অ্যালার্ট সিস্টেম ইনস্টল করার জন্য যাতে অনলাইন ম্যাপিং এবং আবহাওয়ার ইনফরমেশন ব্যবহার করা হয়েছে ঝড়ের গতিপথ নির্ণয়ের জন্য এবং টেক্সট ম্যাসেজের মাধ্যমে জনগণের মোবাইল ফোনে সতর্কতা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। মাইক্রোসফটের সূত্রানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে আগামী দুই মাসের মধ্যে এই সফটওয়্যার টেমপ্লেটের প্রথম সেট পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে এটা ইউরোপে চালু হবে এবং বিভিন্ন মহাদেশের আগ্রহী সরকারদের সাথে কাজ করবে। ইয়াং এর মতে, এই প্ল্যাটফর্ম আরো বৃদ্ধি পাবে। যখন আপনি আর্ট ফেস্টিভ্যালের জন্য অনলাইন টিকেট কিনতে আগ্রহী হবেন, জনগণকে পার্কে তাদের আসন রিজার্ভ করতে দেবেন অথবা সিটি কাউন্সিল এজেন্ডাতে অংশ নেবেন। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যেখানে কিছু সংখ্যক লোক কম্পিউটার ব্যবহার করে সেখানেও ইন্টারনেট সার্ভিস ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধনে। বিশেষ করে সরকারী অফিসের বিভিন্ন কাজ যদি অনলাইনের মাধ্যমে সমাধান হয় তবে সামগ্রিক ব্যাপারে জটিলতা অনেকাংশেই নিরসন হবে এবং সরকার ও জনগণ তাদের নিজ নিজ কাজ অত্যন্ত সহজে সাচ্ছন্দতার সহিত করতে পারবে বলে সংশ্লিষ্টগণ মনে করেন।



