আপনার নিত্য ব্যবহৃত ল্যাপটপ এবং সেলফোনে তারবিহীন রিচার্জিং করার ব্যবস্থা থাকলে নিশ্চয়ই ইলেকট্রিক্যাল সকেটের মাধ্যমে রিচার্জ করার কোন প্রয়োজন হতো না। মানুষের দৈনিন্দিন জীবনকে আরো আধুনিক এবং গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে তারবিহীন নেটওয়ার্কিং পদ্ধতি যাকে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং নামে অভিহিত করা হয় তা সারা বিশ্বজুড়ে খুবই জনপ্রিয়। এরই ধারাবাহিকতায় গবেষকরা বিগত বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলো ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সমিশন বিষয়টিকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র গবেষক এবং বিশ্বখ্যাত ইন্টেল কর্পোরেশনের গবেষকরা সম্মিলিতভাবে ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সমিশন পদ্ধতির গবেষণায় একধাপ অগ্রগতি সাধন করার মাধ্যমে স্বল্প দূরত্বের পণ্যসমূহে তারবিহীন রিচার্জসম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে। মূলত এই সাফল্যকে তারবিহীন রিচার্জিং গবেষণায় একধাপ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করছে গবেষকরা। গত বৃহস্পতিবার গবেষকরা নতুন এই পদ্ধতির মাধ্যমে ওয়্যারলেস প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিন ফিট দূরত্বে একটি ৬০ ওয়াটের বাল্ব জ্বালাতে সক্ষম হয়। যদিও প্রাথমিক অবস্থায় এর এনার্জি এক চতুর্থাংশ নষ্ট হয়। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র অধ্যাপক মেরিন সোলজেসিক জানান, ‘আমাদের এই গবেষণায় সব ধরনের পদ্ধতির প্রয়োগ করার মাধ্যমে আমরা প্রাথমিক অবস্থায় এই প্রযুক্তির ভবিষ্যত সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে সচেষ্ট হয়েছি। এটি মূলত ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ড সমূহের সাথে কম্পিউটারসহ অন্যান্য যন্ত্রাদির ওয়্যারলেস পাওয়ারিং রিচার্জিং ক্ষমতাকে অদূর ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে।’ গবেষকরা এই প্রযুক্তিকে ‘ওয়াইট্রিসিটি’ নামে অভিহিত করছে। কেননা, এটিতে ওয়্যারলেস প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রিসিটির মধ্যে সমন্বয় করা হয়েছে। গবেষকদের এই গবেষণার সাফল্য অব্যাহত থাকলে আশা করা যাচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের অগণিত ল্যাপটপ এবং সেলফোন তারযুক্ত সকেটের মাধ্যমে রিচার্জ করার বদলে তারবিহীন ওয়্যারলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে রিচার্জ করা সম্ভব হবে। ফলে বর্তমানে জনপ্রিয় ওয়্যারলেস টেকনোলজির বহুল ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনধারায় গতিশীলতা আনয়ন করা যাবে।