ইন্টারনেটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন—টপ লেভেল ডোমেইন নাম (.com, .net ইত্যাদি), কান্ট্রি কোড টপ লেভেল ডোমেইন নাম (.uk, .it ইত্যাদি), ডিএনএস (ডোমেইন নেইম সার্ভার) রুট সার্ভার, আইপি (ইন্টারনেট প্রটোকল) ঠিকানা ব্যবস্থপনা ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার কঠোর নিয়ন্ত্রণ শিথিলে সম্মত হয়েছে। এই বিষয়গুলোর দেখভালের কাজে নিয়োজিত বেসরকারি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইন্ড নেইমস অ্যান্ড নাম্বারস (আইসিএএনএন)’কে তার কার্যক্রমের জন্য এখন থেকে এককভাবে আর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হবে না। ১৯৯৮ সালে আইসিএএনএন প্রতিষ্ঠার আগে উল্লিখিত বিষয়গুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ছিল। আইসিএএনএনের সঙ্গে মার্কিন সরকারের দায়বদ্ধতাবিষয়ক চুক্তির মেয়াদ আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হয়ে যাচ্ছে। নতুন করে চুক্তি সম্পাদিত হলেও এর শর্তাবলী অনেক শিথিল হবে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান অনেক আগে থেকেই আইসিএএনএনের ওপর কেবল মার্কিন তত্ত্বাবধানের পরিবর্তে বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত পরিষদের তত্ত্বাবধানের কথা বলে আসছিল। তাদের ভাষায়, আইসিএএনএনের জবাবদিহিতা মার্কিন সরকারের পরিবর্তে ইন্টারনেটের সব বৈশ্বিক ব্যবহারকারীদের কাছে হওয়া উচিত। তাদের মতে, আগামী দিনের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের একটি বড় অংশই আসবে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলো থেকে। সুতরাং আইসিএএনএনের বৈশ্বিক দায়বদ্ধতাই প্রাসঙ্গিক। উল্লেখ্য, আইসিএএনএন সাম্প্রতিক সময়ে আস্তে আস্তে তার রক্ষণশীল পরিকাঠামো কাটিয়ে উঠছে। বিদ্যমান বিভিন্ন টপ লেভেল ডোমেইন ও কান্ট্রি কোড ডোমেইনের পাশাপাশি সংস্থাটি নতুন নতুন আরও ডোমেইনের অনুমোদন দিচ্ছে। এ ছাড়া ইংরেজির পাশাপাশি ডোমেইন নাম যাতে এশীয় বিভিন্ন বর্ণমালা বিশেষত আরবি বর্ণমালায় লেখা যায়, তার চিন্তা-ভাবনাও করছে প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে দক্ষিণ ও পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চালু সিরিলিক বর্ণমালার মাধ্যমে ডোমেইন নাম লেখার বিষয়েও আইসিএএনএনের কাছে আসা একাধিক প্রস্তাব সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।

তবে ঐতিহ্যগতভাবেই আইসিএএনএন মার্কিন সরকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়েই চলতে চায়। সম্ভাব্য নতুন চুক্তি অনুযায়ী এর বিভিন্ন কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য যেসব পর্ষদ গঠিত হবে, সেগুলোয় অন্য রাষ্ট্র ও সংস্থার পাশাপাশি মার্কিন উপস্থিতিও থাকবে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান রড বেকস্ট্রমের ভাষায় ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা একটি দীর্ঘমেয়াদি আনুষ্ঠানিক সম্পর্কের ব্যাপারে আশাবাদী।’


সৌজন্যে : দৈনিক প্রথম আলো