অনাকাঙ্ক্ষিত রেল দুর্ঘটনা এবং যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) তড়িত্ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী রাজেশ মজুমদার ও জীবন চন্দ্র ভৌমিক তৈরি করেছেন কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) নির্ভর ‘ট্রেন মনিটরিং’ ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার ফলে রেল দুর্ঘটনা অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব বলেতাঁরা মনে করেন। শুধু তাই নয়, রেলগাড়ি কোথায় আছে তাও জানা যাবে সঠিকভাবে।

এ পদ্ধতি সম্পর্কে নির্মাতারা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশে টেলিফোনের মাধ্যমে রেলগাড়ির অবস্থান জেনে নেওয়া হয়। অনেক সময় যোগাযোগজনিত ত্রুটির কারণে বা অপারেটরের ভুল বোঝাবুঝিতে দুর্ঘটনা ঘটে। এ ধরনের দুর্ঘটনার মধ্যে ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষই হয় বেশি। এ পদ্ধতির মাধ্যমে সমগ্র দেশের রেলগাড়ির অবস্থান, গতি এবং স্টেশন থেকে কত দূরত্বে আছে তা মুহূর্তের মধ্যে জানা যাবে এবং মানচিত্র আকারে তা দেখাও যাবে।’

গবেষকেরা আরও জানান, সম্পূর্ণ পদ্ধতিটি নিয়ন্ত্রিত হবে একটি গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) এবং একটি ওয়েব সার্ভারের মাধ্যমে। এই জিপিএস ট্রেনের ভেতর বসানো হবে।সেটি কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে সংকেত আদান-প্রদান করে রেলগাড়িটির অবস্থান, গতি ও নির্দিষ্ট স্টেশন থেকে কত দূরত্বে আছে তা হিসাব করে ডেটাবেইসে পাঠাবে।কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষে প্রতিটি ট্রেনের প্রতি মুহুর্তের অবস্থান, গতি ও দূরত্ব মানচিত্রে দেখা যাবে। যেহেতু পদ্ধতিটি ইন্টারনেট-ব্যবস্থার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে, তাই খরচ কম হবে। একটি জিপিএস একটি রেলগাড়িতে বসাতে ১০ হাজার টাকা লাগবে।

জীবন ও রাজেশের এই গবেষণার তত্ত্বাবধানে ছিলেন চুয়েটের তড়িত্ ও ইলেকট্রনিক বিভাগের প্রভাষক নিপু কুমার দাশ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেলওয়ের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক কথা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে।’ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ভবিষ্যতে এ দুই প্রকৌশলী বাংলাদেশের রেল যোগাযোগব্যবস্থায় প্রযুক্তিটি ব্যবহার করতে চান বলে জানিয়েছেন।


সৌজন্যে : দৈনিক প্রথম আলো